ফ্রি পেয়েও বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচের টিকিট নেয়নি কেউ

বৃষ্টিতে মাঠেই গড়ায়নি বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ। ছবি: এক্স

পাকিস্তানে লম্বা সময় পর ফিরেছে আইসিসি ইভেন্ট। তবে স্বাগতিক দেশের বাজে পারফরম্যান্সে ক্ষুব্ধ সমর্থকরা। এমনকি বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তানের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ফ্রিতে টিকিট দিতে চেয়েছিলেন অনেকে, তবুও কেউ সেই ম্যাচ দেখতে আগ্রহ দেখায়নি- পাকিস্তানের দর্শকের এমন হতাশার চিত্র উঠে এসেছে এক প্রতিবেদনে।

রাওয়ালপিন্ডিতে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচের আগে থেকেই স্বাগতিকদের খেলা দেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে সমর্থকরা। নিউজিল্যান্ডের কাছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রথম ম্যাচে ৬০ রানের হারের পর ভারতের কাছে একতরফা হারে টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে যায় পাকিস্তান। 

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিজ দেশের বাজে পারফরম্যান্স মাঠে বসে দেখেছিলেন কাশান খান নামে একজন মেডিক্যাল শিক্ষার্থী। পাকিস্তানের পারফরম্যান্স নিয়ে এএফপিএকে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এই সমর্থক বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে এমন একটি বিয়েতে এসেছি যেখানে বর-কনে কাউকেই চিনি না।’

কাশান খান আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের বাজে পারফরম্যান্স আমার উৎসাহ কমিয়ে দিয়েছে। আমি এখন অন্য দলের খেলা দেখার বিষয়ে চিন্তা করছি না।’

এদিকে রাওয়ালপিন্ডিতে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচের আগে অনেক টিকিটধারী সমর্থকদের টিকিট বিক্রি করার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। কিন্তু কেউই তা নিতে রাজি হয়নি। সেই ম্যাচের টিকিট পাওয়া ফারুক আলী এএফপিকে বলেন, ‘আমার কাছে তিনটি টিকিট ছিল কিন্তু কেউই তা কিনতে ইচ্ছুক ছিল না। এমনকি আমি এগুলো(টিকিট) ফ্রিতেও দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমার বন্ধুরা আগ্রহ দেখায়নি।’


আগামী ৯ মার্চ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনাল। এর আগে লাহোরে ৫ মার্চ একটি সেমিফাইনালও অনুষ্ঠিত হবে। তবে ভারত ফাইনালে না উঠতে পারলে লাহোরেই হবে এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল।

সেক্ষেত্রে পাকিস্তানের দর্শকরা মাঠে গিয়ে খেলা দেখবে তো? এমন প্রশ্ন স্বাগতিকরা বাদ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই উঠছে।

আমনা মাশাদি নামে এক সমর্থক যিনি টিভিতে এই টুর্নামেন্টটি দেখছেন তিনি এএফপিকে বলেন, ‘যদি পাকিস্তান এখানে না খেলে তাহলে আমরা কেন একে(টুর্নামেন্ট) পাত্তা দেব।’


এদিকে ক্ষতির মুখ দেখেছে সম্প্রচারকারী সংস্থারা। পাকিস্তানে এখন পর্যন্ত বৃষ্টির কারণে তিনটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। রাওয়ালপিন্ডিতে দুটি ও একটি লাহোরে।

আইসিসি ইভেন্টে এমন ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে স্বাভাবিকভাবেই লোকসান গুনতে হয় সম্প্রচারকারীদের।

পাকিস্তানের টিভি চ্যানেল পিটিভি ও টেন স্পোর্টস যৌথভাবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ১৫টি ম্যাচের জন্য প্রত্যকেই ১২০ কোটি পাকিস্তানি রুপি দিয়ে আয়োজক স্বস্ত্ব কিনেছিল। এএফপিকে সম্প্রচারকারীদের একটি সূত্র জানিয়েছে ইতিমধ্যে শুধু রাওয়ালপিন্ডির দুটি ম্যাচ বাতিল হয়ে যাওয়ায় তাদের ১৮ কোটি পাকিস্তানি রুপি ক্ষতি হয়েছে।


পাকিস্তানের বাজে পারফরম্যান্সের কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন জার্সি বিক্রেতারাও। এএফপিকে মোহাম্মদ রিজওয়ান নামের এক জার্সি বিক্রেতা বলেন, ‘যখন জাতীয় দল(পাকিস্তান) দ্রুত বাদ পড়ে যায়, গ্রাহকরা মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং পণ্যের (জার্সি) বিক্রিতে প্রভাব পড়ে। টুর্নামেন্টের আগের সপ্তাহে পাকিস্তানের শার্টের (জার্সি) চাহিদা ছিল আকাশচুম্বী, আমার অর্ডার দ্বিগুণ হয়ে যায়। কিন্তু দল (পাকিস্তান) হারার সঙ্গে সঙ্গে চাহিদা কমে গেছে। এখন আমার গুদামে (ওয়ারহাউজ) অবিক্রিত বিশাল স্টক পড়ে আছে। এটি অনেক বড় ক্ষতি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *