সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী বাংলাদেশের একজন আলোচিত সুফি সাধক এবং দেওয়ানবাগ দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি ১৯৪৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম সৈয়দ আবদুর রশিদ সরদার এবং মাতার নাম সৈয়দা জোবেদা খাতুন। ছয় ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। তিনি তালশহর কারিমিয়া আলিয়া মাদ্রাসা থেকে ফাজিল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন।
শিক্ষাজীবন শেষে সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা ফরিদপুরের চন্দ্রপাড়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা আবুল ফজল সুলতানা আহমেদ চন্দ্রপুরীর কন্যা হামিদা বেগমকে বিবাহ করেন। পরে তিনি নারায়ণগঞ্জের দেওয়ানবাগ এলাকায় একটি দরবার শরীফ স্থাপন করে সুফি সাধনা শুরু করেন। এই স্থান থেকেই তার নামের সঙ্গে “দেওয়ানবাগী” উপাধি যুক্ত হয়। পরবর্তীতে তিনি রাজধানীর মতিঝিলের আরামবাগে বাবে রহমত দেওয়ানবাগ দরবার শরীফ স্থাপন করে তার কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
দেওয়ানবাগী পীর তার ধর্মীয় শিক্ষা ও সুফি দর্শনের মাধ্যমে দেশব্যাপী ভক্ত ও অনুসারী সংগ্রহ করেন। তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় সমাবেশ ও মাহফিলে বক্তৃতা দিয়ে ইসলামের সুফি ধারার প্রচার ও প্রসারে অবদান রাখেন। তাঁর দরবার শরীফে নিয়মিতভাবে ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও সেবা কার্যক্রম পরিচালিত হতো, যা বহু মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল।২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর ভোর ৬টা ৪৮ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তার মৃত্যুতে দেশব্যাপী ভক্ত ও অনুসারীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। গার্ড অফ অনার এর মাধ্যমে এই মহামানবকে শেষ বিদায় দেওয়া হয়।
সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগীর জীবনী বাংলাদেশের সুফি ধারার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয়। তার ধর্মীয় শিক্ষা ও দর্শন বহু মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলেছে এবং তার প্রতিষ্ঠিত দরবার শরীফ আজও ধর্মপ্রাণ মানুষের জন্য একটি কেন্দ্রস্থল হিসেবে বিদ্যমান।